ধর্ম ডেস্ক | ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৫
আজ ২৫শে ডিসেম্বর, খ্রিস্টধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব বড়দিন। পশ্চিমা সংস্কৃতির প্রভাবে ইদানীং মুসলিম প্রধান দেশগুলোতেও এই দিনটি পালনের ঝোঁক দেখা যাচ্ছে। তবে ইসলামি গবেষক ও আলেমগণ কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে মুসলিমদের এই উৎসবে অংশগ্রহণের ব্যাপারে কঠোর সতর্কবার্তা প্রদান করেছেন।
শিরক ও আকিদাগত সংঘাত: ইসলামি পণ্ডিতদের মতে, বড়দিন বা ক্রিসমাসের মূল ভিত্তি হলো যিশু খ্রিস্ট বা ঈসা (আ.)-কে ‘আল্লাহর পুত্র’ (নাউজুবিল্লাহ) হিসেবে বিশ্বাস করা। পবিত্র কুরআনের সূরা ইখলাসে আল্লাহ তায়ালা স্পষ্ট করেছেন— “তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং কেউ তাকে জন্ম দেয়নি।” (আয়াত: ৩)। আলেমদের মতে, এই উৎসবে শরিক হওয়া বা শুভেচ্ছা বিনিময় করার অর্থ হলো পরোক্ষভাবে তাদের এই ভ্রান্ত আকিদাকে সমর্থন করা, যা সরাসরি শিরকের অন্তর্ভুক্ত।
বিজাতীয় সংস্কৃতির অনুকরণ: রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন— “যে ব্যক্তি যে জাতির সাদৃশ্য অবলম্বন করবে, সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত হবে।” (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ৪০৩১)। আলেমগণ বলছেন, বড়দিনের বিশেষ পোশাক পরা, ক্রিসমাস ট্রি সাজানো বা সান্তাক্লজের ধারণা গ্রহণ করা মূলত বিজাতীয় সংস্কৃতির অন্ধ অনুকরণ, যা ইসলামে নিষিদ্ধ।
উদারতা বনাম ধর্মীয় স্বকীয়তা: ইসলাম অন্যান্য ধর্মের মানুষের প্রতি দয়া ও সামাজিক সদাচরণের শিক্ষা দেয়। কিন্তু ‘ধর্ম যার যার, উৎসব সবার’—এই স্লোগানকে ইসলামি শরিয়ত সমর্থন করে না। ইসলামি আইনবিদদের মতে, প্রতিবেশীর বিপদে পাশে দাঁড়ানো বা তাদের জান-মালের নিরাপত্তা দেওয়া মুসলিমদের দায়িত্ব, কিন্তু তাদের ধর্মীয় উপাসনা বা কুফরি বিশ্বাসে অংশ নেওয়া ইমানের পরিপন্থী।
আলেমদের পরামর্শ: দেশের শীর্ষস্থানীয় ওলামায়ে কেরাম মুসলিম সমাজকে বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মকে বড়দিনের মেকি জাঁকজমক থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তারা বলছেন: ১. এই দিনে বিশেষ খাবার বা উৎসবের আয়োজন করা থেকে বিরত থাকতে হবে। ২. সোশ্যাল মিডিয়ায় বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করা ইমানি চেতনার পরিপন্থী। ৩. শিশুদের পশ্চিমা সংস্কৃতির কুপ্রভাব থেকে বাঁচাতে ঘরে দ্বীনি পরিবেশ তৈরি করতে হবে।
পরিশেষে, মুসলিম হিসেবে আমাদের আদর্শ হওয়া উচিত কুরআন ও সুন্নাহ। অন্য ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা থাকলেও নিজের ইমান ও আকিদা বিসর্জন দিয়ে কোনো উৎসবে মেতে ওঠা মুসলিম উম্মাহর জন্য শোভনীয় নয়।